থান কাপড়ের পাইকারি বাজার কোথায়

থান কাপড়ের পাইকারি বাজার


থান কাপড় বলতে সাধারণত যে কাপড়গুলো রোল বা বেল হিসেবে বিক্রি করা হয়, সেগুলোকে বোঝায়। সাধারণত ১২ গজ, ১৫ গজ বা ২০ গজ মাপে এই কাপড় বিক্রি হয়। থান কাপড় বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি এবং ব্যবসার জন্য বেশ জনপ্রিয়। জামা, পাঞ্জাবি, শাড়ি, কুর্তি, ব্লাউজ, বেডশিট, পর্দা ইত্যাদি তৈরিতে থান কাপড় ব্যবহৃত হয়। আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানব থান কাপড়ের পাইকারি বাজার সম্পর্কে। চলুন তবে শুরু করা যাক-


থান কাপড়ের ধরন

থান কাপড় বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে, যেমন:


কটন: সবচেয়ে জনপ্রিয়, আরামদায়ক এবং গরম আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত।

সিল্ক: বেশ ঝলমলে এবং উচ্চমানের কাপড়, যা সাধারণত শাড়ি ও দামি পোশাকে ব্যবহৃত হয়।

লিনেন: হালকা, আরামদায়ক এবং ট্রেন্ডি ফ্যাব্রিক।

ভিসকস: সফট ও চকচকে কাপড়, যা কুর্তি, শাড়ি এবং টপসে ব্যবহৃত হয়।

পলিয়েস্টার ও মিক্সড ফ্যাব্রিক: অধিক মজবুত এবং কম দামের কাপড়।

থান কাপড়ের প্রধান পাইকারি বাজার


বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে থান কাপড়ের পাইকারি বাজার রয়েছে। তবে প্রধান বাজারগুলো হলো:


১. ইসমাইল গঞ্জ ও বাবুবাজার (ঢাকা)

ঢাকার সদরঘাটের কাছাকাছি অবস্থিত এই দুটি বাজার বাংলাদেশে থান কাপড়ের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার। এখানে দেশীয় এবং আমদানি করা বিভিন্ন ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। বড় বড় পাইকাররা এখান থেকে কাপড় কিনে সারা দেশে সরবরাহ করেন।


২. নরসিংদী কাপড়ের বাজার


নরসিংদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ কাপড় উৎপাদনকারী জেলা। এখানকার কাপড়ের গুণগত মান ভালো এবং দাম তুলনামূলক কম। থান কাপড়ের জন্য বেশ কিছু বড় পাইকারি মার্কেট রয়েছে, যেখানে তুলা, সুতি এবং অন্যান্য ফ্যাব্রিক পাওয়া যায়।


৩. টাঙ্গাইল তাঁত বাজার

টাঙ্গাইল থান কাপড়ের জন্য বিখ্যাত। এখানকার তাঁত শিল্পীরা নানা ধরনের ফ্যাব্রিক উৎপাদন করেন, যা পাইকাররা কিনে নেন। বিশেষ করে তাঁতের থান কাপড়ের চাহিদা অনেক বেশি।


৪. আশুলিয়া ও গাজীপুর গার্মেন্টস অঞ্চল

এখানে মূলত গার্মেন্টসের কাপড় বিক্রি হয়। পাইকারি বাজারগুলোতে বড় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাপড়ের বেল বিক্রি করা হয়, যা ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য উপযুক্ত।


৫. চট্টগ্রাম কাপড়ের পাইকারি বাজার

চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন বাজার ও টেরি বাজার থান কাপড়ের জন্য পরিচিত। এখানে দেশীয় এবং আমদানি করা কাপড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে ভারত ও চীনের কাপড়ের সরবরাহ এখানে বেশি।


পাইকারি দামে থান কাপড় কেনার সুবিধা

পাইকারি থান কাপড় কিনলে আপনি বেশ কিছু সুবিধা পাবেন। আপনি যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তবে পাইকারি থান কাপড় কিনলে আপনার জন্য লাভ হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক পাইকারি থান কাপড় কেনার সুবিধা-


খুচরা দামের তুলনায় অনেক কম দামে কাপড় পাওয়া যায়।

বিভিন্ন রকমের কাপড় একসাথে কেনার সুযোগ থাকে।

ফ্যাশন ডিজাইনার, বুটিক মালিক ও ব্যবসায়ীদের জন্য উপযুক্ত।

উৎসবের সময় কম দামে বেশি স্টক নেওয়ার সুবিধা।

কিভাবে পাইকারি দামে থান কাপড় কিনবেন?

অনেকেই পাইকারি থান কাপড় কিনতে পারেনা। পাইকারি থান কাপড় কেনার কিছু প্রক্রিয়া আছে। যেমন-


১. বাজারে গিয়ে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে দাম যাচাই করুন।


২. বড় পরিমাণে কিনলে ছাড় পাওয়া যায়।


৩. পরিচিত ও বিশ্বস্ত পাইকারদের কাছ থেকে কাপড় কিনুন।


৪. কেউ যদি ঢাকার বাইরে থাকেন, তাহলে অনলাইনে পাইকারি বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।


৫. কাপড়ের মান ও মিটার ঠিক আছে কিনা, তা যাচাই করে কিনুন।


থান কাপড়ের পাইকারি দাম


থান কাপড়ের দাম বিভিন্ন ফ্যাব্রিক ও গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত:


কটন: প্রতি গজ ৫০-১০০ টাকা

লিনেন: প্রতি গজ ১০০-২৫০ টাকা

সিল্ক: প্রতি গজ ২০০-৫০০ টাকা

ভিসকস ও পলিয়েস্টার: প্রতি গজ ৭০-১৫০ টাকা

থান কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা করার পরামর্শ

সরাসরি বাজার থেকে কিনলে খরচ কম হয়।

অনলাইনে ব্যবসা করলে ভালো লাভ করা সম্ভব।

ট্রেন্ড অনুযায়ী কাপড়ের সংগ্রহ রাখুন।

বিশ্বস্ত সরবরাহকারীর সাথে কাজ করুন।

বড় ব্যবসায়ীদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করুন।


শেষকথা, থান কাপড়ের পাইকারি বাজার ব্যবসার জন্য অত্যন্ত লাভজনক। যারা কাপড়ের ব্যবসা করতে চান, তারা অবশ্যই সরাসরি বাজারে গিয়ে কাপড়ের মান ও দাম যাচাই করে কিনবেন। অনলাইনে বিক্রির সুযোগও দিন দিন বাড়ছে, তাই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও নজর দেওয়া উচিত।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

Musik

Bisnis