কৃষি লোন agriculture loan
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের ৮৫ ভাগ মানুষই কৃষি কাজে নিয়োজিত।এ দেশের বেশি ভাগ মানুই দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। আর আমাদের দেশের কৃষকরা এখন সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকে। চাষের উন্নতির জন্য বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, কৃষি লোন দিয়ে থাকে। তাহলে চলুন জেনে নেই কৃষি লোন সম্পর্কে:-
কৃষি ঋণের প্রকারভেদ
সাধারণত কৃষি লোন কে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে নিচে তা দেওয়া হলো:-
১ নং :- স্বল্প মেয়াদী ঋণ
খাদ্যশস্য
আমন, বোরো,জব,গম,সরিষা,পাট, ভুট্টা, শীতকালীন সবজি, ডাল,গ্রীষ্মকালীন কালীন ফসল, মাছ চাষ,খাদ্যশস্য গুদামজাতকরন, সকলের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী লোন প্রদান করে থাকে।
এই ঋণ সর্বোচ্চ ১৮ মাস মেয়াদের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।
২ নং :- মধ্যমেয়াদি ঋণ
মাছ রেনু উৎপাদন, আলু সংরক্ষণ, কৃষি পণ্য বিপণন,কৃষিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, এছাড়া কীটনাশকের ডিলার।
সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয়,
চিংড়ি চাষ,
গরু ছাগলের পালন ,
পোল্ট্রি খামার তৈরি,
কুটির শিল্প তাঁত শিল্প ক্ষেত্রে
এ সকল কাজের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি লোন প্রদান করা হয়ে থাকে।
এ লোন ১৮ মাসের বেশি কিন্তু পাঁচ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।
৩ নং :- দীর্ঘমেয়াদি লোন
গরুর খাবার তৈরি, ছাগলের খামার,হাস,মুরগী খামার,মৎস্য খামার, ফলের বাগান,
রাবার চাষ, চা বাগান,
প্রকল্প ঋণ,
গ্রীণ ব্যাংকিং লোন,এসএমই ঋণ, ও কনজ্যুমার ঋণ
এসকল লোনের ৫ বছরের ঊর্ধ্বে মেয়াদ করা হয়ে থাকে। এবং প্রকল্প অনুযায়ী এদের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
বৈদেশিক বাণিজ্যের সম্পর্কিত ঋণ
এলটি আর,
পি এ ডি,
আই বি পি,
প্যাকিং/ ক্রেডিট
এ সকল ঋণ আমানতের বিনিময়ে দেওয়া হয়ে থাকে।
ঋণ আবেদনকারীর যোগ্যতা
যারা কৃষি কাজে সরাসরি ভাবে জড়িত তারাই কৃষি লোন পাওয়ার যোগ্য।
# বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
# প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে (১৮+)
# ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা থাকতে হবে।
# খেলাপি সদস্য নতুন করে লোন পাওয়ার যোগ্য হবে না।
# কোন দেওলিয়া ব্যক্তি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবে না
# শিক্ষিত, সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতা, ঝুঁকিবহনের সক্ষমতা, নিজে উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করা ব্যক্তি লোন পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
লোন আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র / কৃষ্ণ ব্যাংকে লোন নিতে কি কি লাগে।
লোনের মেয়াদ অনুসারে কাগজের তারতম্য হতে পারে। যেমন :- স্বল্প মেয়াদী লোন নিতে হলে আপনাকে তিনটা কাগজ অবশ্যই দিতে হবে
১ নং :- ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি
২ নং :- পাসওয়ার্ড সাইজের দুই কপি ছবি ও
৩ নং :- নাগরিক সনদপত্র।
এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আপনার ঋণ অনুমোদনের জন্য জমির কাগজ দেখতে চাইতে পারেন।
মধ্যমেয়াদ ও দীর্ঘ মেয়াদি লোন হলে আপনাকে আরো কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হবে।
৪ নং :- জামিনদার এর আইডি কার্ড ও ছবি।
৫ নং :- জমির পরচা,
৬ নং :- খাজনার কপি,
৭ নং:- উওরাধিকারের সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির খাজনার কপি।
৮ নং :- জনমানত সম্পত্তির অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে জজ কোর্ট থেকে বন্দক এর অনুমতি পত্র।
৯ নং :- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
কৃষি ব্যাংকে লোন ইন্টারেস্ট কত / কৃষি ব্যাংকে সুদের হার কত
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সুদের হার ৮% ধরা হয়।কেননা ক্রেডিট ছাড়া অন্য কেনো ঋণের সুদের হার ৯% ভাতার বেশি হতে পারে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লোনের সুদ নির্ভর করে লোনের মেয়াদের উপর। এছাড়া ব্যাংকে বিভিন্ন প্রকল্পের লোন এসে থাকে এসব প্রকল্পের লোন গুলোতে সুদ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু আপনারা চাইলে কৃষি লোন ৮% সুদের হারে নিতে পারেন।
৪% লাভে কৃষি লোন / কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ৪% সুদে ঋণ মিলবে
দেশের পাঁচ হাজার কোটি টাকা পূর্ণঃ অর্থায়ন করা হয়েছে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। যা ৪% লাভে এ ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা হবে।
ধান চাষ, মৎস্য চাষ, ফুল ও ফল চাষ, হাঁস-মুরগী পালন এছাড়া গাভী পালন করার জন্য এ লোন নিতে পারবে চাষিরা। এ লোন পরিশোধের মেয়াদ পাবে কৃষকরা সর্বোচ্চ ১৫ মাস।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক বর্গা চাষীরা বিনা জামানতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে।
ঋণ চলাকালীন অবস্থায় মারা গেলে / মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধ / মারা গেলে ঋণ মাপ
কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিলে, ঋণগ্রহীতা যদি মারা যাই। সেক্ষেত্রে ঋণ মাফ করে দেয়া হয়। ঋণগ্রহীতা যখন ঋণ গ্রহণ করে সে সময় তার কাছে থেকে কল্যাণের টাকা নেয়া হয়ে থাকে।এজন্য গ্রাহক যদি মারা যায় সে ক্ষেত্রে আসল এবং সুদ সহ ঋণ মওকুফ করে দেয়া হয়।
এক্ষেত্রে ঋণ মওকুফের জন্য আপনাকে একটি আবেদনপত্র লিখতে হয়। ঋণ মওকুফের আবেদন পত্র, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধানকার্যালয় পাঠাতে হয়।
এক্ষেত্রে আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করবেন। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঋণ মওকুফের আবেদন পত্র পাঠাতে হবে।
কৃষি ব্যাংকের সুদ মওকুফের আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
সাধারণ প্রশ্ন
কৃষি লোন কী?
সাধারণত কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং যে সকল অর্থ ঋণ নিয়ে কৃষি কাজে ব্যবহার করা হয় সেটাই হলো কৃষি লোন। বা এক কথায় বললে কৃষি কাজে ব্যায় করার জন্য যে লোন প্রদান করে সেটাই কৃষি লোন।
চাষের জন্য কোন লোন ভালো?
চাষের জন্য কৃষি লোন ভালো।
কৃষি লোন কত?
কৃষি লোন ১০/১৫ হাজার টাকা।আর ফার্ম হলে ২০/২৫ কোটি টাকা।
কৃষি ব্যাংকের সুদের হার কত?
কৃষি ব্যাংকের সুদের হার ৮%
কৃষক কেন ঋণ নেয়
কৃষি কাজ মৌসুম কাজ, এজন্য কৃষক কে কেউ টাকা ধার দেয় না। যার ফলে কৃষক লোন নেয়।
কৃষি ব্যাংক লোন অ্যাপস
আপনার চাইলে কৃষি লোনের জন্য অ্যাপস এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।এখন আপনারা চাইলে ঘরে বসে BKB apps এর মাধ্যমে ঘরে বসে লোন আবেদন করতে পারেন।
আপনার স্মার্ট ফোনটি নিয়ে BKB apps টি ডাউনলোড করে নিতে পারে। এর মাধ্যমে খুব সহজে অনলাইনে কৃষি লোন আবেদন করতে পারেন।
এ অ্যাপস এর মাধমে আপনি লোন সম্পর্কে সব কিছু জানতে পারবেন।
আমাদের শেষ কথা :- উপরের পোষ্ট টি পড়ে নিশ্চিত বুঝতে পেরেছেন কৃষি লোন সম্পর্কে, এছাড়া এ সম্পর্কে যদি কেনো প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্য আমাদের কে কমেন্ট করে জানবেন আশা করি আপনাদের সঠিক উওর দেবার চেষ্টা করবো।