বর্তমান প্রজন্মে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন নারী পুরুষ সকলের ক্ষেত্রেই ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। তাই বেশিরভাগ মানুষ ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চান৷ কিন্তু সে সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা না থাকায় অনেকে গুগল, ব্রাউজার, ক্রোম ওয়েবসাইট ইত্যাদির মাধ্যমে ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন সম্পর্কে জানতে চান৷ তাই আপনাদের সুবিধার্থে, আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনার ফোন অথবা ল্যাপটপের মাধ্যমে ঘরে বসেই ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করা যায়।
2.0K | 4 days | |
ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ২০২৪ / ই পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজন |
ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে এটি করার জন্য কি কি প্রয়োজন। যেমনঃ অনলাইনে আবেদনের সারসংক্ষেপ বা সামারী, আবেদনের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, আপনার স্থায়ী ঠিকানা অথবা অস্থায়ী ঠিকানা, ঠিকানার প্রমাণপত্র অথবা ইউটিলিটি বিলের কপি- এগুলো অবশ্যই প্রযোজ্য এ ক্ষেত্রে৷
যদি আপনার পূর্ববর্তী পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে সেটার ফটোকপি অথবা অরিজিনাল পাসপোর্ট অবশ্যই প্রযোজ্য। পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, (এটি শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যক), আপনার পেশাগত সনদের ফটোকপি অথবা চাকুরীর আইডি কার্ড।
পেশাজীবির ক্ষেত্রে - যেমন ,আপনার পেশা যদি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিসাবরক্ষক, আইনজীবি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে প্রয়োজন -নাগরিক সনদ অথবা চেয়ারম্যান কতৃক সার্টিফিকেট। এসব যাবতীয় তথ্যের ভিত্তিতে আপনি নিশ্চিন্তে ই পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন করতে পারবেন৷ এগুলো ছাড়া আবেদন করা সম্ভব নয়৷
ই পাসপোর্ট করার নতুন নিয়ম ২০২৪/ ই পাসপোর্ট নতুন ওয়েবসাইট /e-passport new website
আবেদন করার নিয়মাবলিঃ
ধাপ ১ঃ আপনার নিজস্ব মোবাইল ফোন অথবা ল্যাপটপের সাহায্যে অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার জন্য ইন্টারনেটের একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
ওয়েবসাইট লিংকঃ www.epassport.gov.bd
এই লিংকে প্রবেশ করে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসারে অনলাইনে আবেদনের ফরম পূরণ করুন। পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের আগে প্রথমে আপনার জেনে নিতে হবে আপনার জেলায় ই পাসপোর্ট সেবা প্রদান করছে কিনা।
ধাপ ২ঃ সে ক্ষেত্রে ভিজিট করুন - E-passport application.
লিংকে ক্লিক করার পর একটি হোমপেজ আপনার সামনে আসবে৷ যেখানে Directly to online Application নামক একটি অপশন থাকবে। আপনাকে সেখানে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার সাথে সাথে আরেকটি পেজ আসবে সেখানে আপনি আপনার জেলা ও থানার নাম সিলেক্ট করবেন। জেলা এবং থানার নাম সিলেক্ট করার পর এবার আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। এখানে আপনি যে ইমেইল এড্রেসটি লিখবেন সেটির পাসওয়ার্ড যেন আপনার জানা থাকে। কারণ পাসওয়ার্ড না জানলে আপনি সেটি ভেরিফাই করতে পারবেন না। আপনার ইমেইলের পাসওয়ার্ড জানা থাকলে আপনি আপনার ইমেইল টি লিখুন। ইমেইল দেওয়ার পর পর ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠানো হবে। আপনাকে সেই লিংকে ক্লিক করে আপনার ইমেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।
ধাপ ৩ঃ ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর পুনরায় ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে লগ ইন করুন। এরপর আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ঠিকানা, পিতা-মাতার যাবতীয় তথ্য এবং আপনার স্বামী অথবা স্ত্রীর তথ্য সঠিকভাবে লিখুন। এরপর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা তার নম্বর দিন। এক্ষেত্রে আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয়ে থাকে এবং আপনার কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে তাহলে আপনি অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া, আপনার বয়স যদি ১৮ - ২০ বছরের মাঝামাঝি হয় তাহলে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন যেকোনো একটির দ্বারাই ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করতে পারবেন। ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদনের জন্য কোনো কাগজ পত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়াও আবেদনের ফরমে কোনো প্রকার ছবি সংযোজন অথবা তা সত্যায়ন করার কোনো প্রয়োজন হবে না। জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার পরিবারের বাবা, ভাই অথবা পরিবারের অন্য কারো নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিন। এবার আপনার পাসপোর্টের ধরন, পাতা ও ডেলিভারী সাধারণ বা জরুরী তথ্য বাছাই করুন। সবশেষে আপনার সব তথ্য পূনরায় যাচাই করে আবেদন জমা দিতে Submit বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৩ঃ ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করা সম্পন্ন হলে আপনাকে তার ফি প্রদান করতে হবে এবং আবেদনের ফরম টি প্রিন্ট করিয়ে নিতে হবে। প্রিন্ট করার জন্য আপনি ২টি পৃষ্ঠা পাবেন। একটা হলো Application Summery এবং আরেকটি হলো Online Registration Form. এগুলো আপনি প্রিন্ট করে নিতে পারেন বা পিডিএফ ফাইল হিসেবে আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটারে সেইভ করে রাখতে পারেন।
ধাপ ৪ঃ অনলাইনে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার পর যদি কোনো কারণে আপনি নিজে থেকে আবেদন বাতিল করতে চান তাহলে আপনি সেটা পারবেন না। এক্ষেত্রে আবেদন বাতিলের জন্য আপনাকে জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে। তাছাড়া, আবেদনে কোন প্রকার ভুলের কারণে যদি আবেদন বাতিল করতে চান, তাহলে সেটা বাতিল না করলেও চলবে। কেননা পাসপোর্ট অফিস থেকে এসব ভুল সংশোধন করে পাসপোর্ট আবেদন এনরোলমেন্টে দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত আপনার ভুলের ব্যপারে পাসপোর্ট অফিস কে অবগত করা।
ঘরে বসে ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন
এভাবেই ই-পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার নিয়মাবলি মেনে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসেই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও গুগলে অথবা অন্য অন্য কোনো ইন্টারনেট ওয়েবসাইটে ই পাসপোর্ট আবেদন, ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম, ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম ২০২৪, ই পাসপোর্ট আবেদন ওয়েবসাইট, ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ই পাসপোর্ট তথ্য ইত্যাদি লিখিত সার্চের মাধ্যমে আপনি ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন সম্পর্কে জানতে পারবেন। এতে আপনার মোবাইল ফোন অথবা নিজস্ব ল্যাপটপই যথেষ্ট। অন্য কারো সাহায্যের প্রয়োজন নেই।